এমন মনোভাবে

ধরে যজ্ঞের ঘোড়া
এমন সাহস বুকে রাখে
ছোট্ট লব কুশ তারা?

রঘুবংশের খ্যাতি
কিশোর হাতে নষ্ট হবে?
কাদের চওড়া ছাতি?

দেখে ছাতির বহর
রামের ভ্রাতা হারল যেন
সাগর হারায় লহর।

রামের দেখা স্বপ্ন
পূরণ হবে সোজা পথে?
ছুঁড়ে দিল প্রশ্ন।

তুচ্ছ করা এমন
মনোভাবের অধিকারী
হারে যখন তখন।

হোক না উচ্চ বংশ
এমন মনোভাবে শুধু
জয়ের আশা ধ্বংস।

কাউকে ছোট ভাবা-
গলদ চালে দাবা খেলা
হারবে তুমি দাবা।
এমন মনোভাবে

জুতো খুলে

প্রাতঃভ্রমণ করতে গিয়ে
সবুজ ঘাসের মাঠে হাঁটি,
জুতো পায়ে বুকে ইগো
আমি কি আর তেমন খাঁটি?

অনেক সুজন জুতো খুলে
হাঁটছে যেন ভালোবাসায়,
সবুজ তৃণের কোমল স্পর্শে
তাদের ইগো যেন পালায়।

প্রকৃতিতে ইগো ছাড়া
আমরা যদি চলতে পারি,
জীবন পথে ইগোয় ডুবে
ফেলি কেন অশ্রুবারি?

ঘাসের ‘পরে ইগো ফেলে
হাঁটতে পারি অনায়াসে,
ভেদাভেদের জুতো খুলে
সুজন হাঁটে সবুজ ঘাসে?

জুতো খুলে হাঁটুক সবাই
বক্ষ হোক না ইগো ছাড়া,
এমন দিনের অপেক্ষাতে
রইতে পারি নেই যে তাড়া।

জুতো খুলে

মুক্তোর মালা

মুক্তোর মালা পরতে
কে না ভালোবাসে?
মুক্তো খুঁজতে তারা কি
সিন্ধু বক্ষ চষে?

ক’টি শুক্তি মেলে ধরে
মুক্তোর সন্ধান?
মোদের সমাজে থাকে
কজন বিদ্বান?

কত তাপ শুক্তি বুকে
মুক্তো সৃষ্টি করে,
জানতে পারে না গলা
যেটি মালা ধরে।

নকল মুক্তোর মালা
কাড়ে কেন মন?
আসল মুক্তোর খোঁজ
করে কত জন?

ডুবুরি শুক্তির খোঁজে
যায় সিন্ধু তলে,
কজনে সলিলে নামে
কজনে বা স্থলে?

ষোলো আনা শখে ভরা
পরি মুক্তো মালা,
ভুলি গেছি কেষ্ট পেতে
প্রাপ্তি কষ্ট জ্বালা।

কষ্ট করে মুক্তো খোঁজা
লোকজন চাই,
গুমোট বাতাস কাঁদে
নাই নাই নাই।

মুক্তো

 

ক্ষতি করলে

ক্ষতি করলে

পরের ক্ষতি করলে শুধু
অন্য জনে আঘাত পায়,
ভুল যে তোমার ভাবনাখানা
বুঝবে যত সময় যায়।

মন্দ বীজে মন্দ ফসল
মানতে তুমি পারনা,
কালের স্রোতে বদলে যাবে
তোমার মনের ধারণা।

থাকলে মনে মন্দ চিন্তা
মন্দ মতির স্থায়ী বাস,
পরের ক্ষতি করতে যাবে
লাগবে তোমার গলায় ফাঁস।

শুরুতে সে ফাঁসের ব্যথার
অনুভূতি পায় না গল,
ধীরে ধীরে কালের স্রোতে
দুঃখ বাড়ে হরেক পল।

ভেবেছিলে ভুল টিকিটে
পৌঁছাবে সুখ স্টেশনে?
যাত্রা শেষে দুখের দাগটি
লাগে জীবন বসনে।

কথা রাখা

কথা রাখা

হৃদয় জেতার মন্ত্র হলো
কথা দিয়ে কথা রাখা,
কথা রাখা প্লেনটি হলে
দায় নেওয়াটা তারি পাখা।

দায়টি নিয়ে কথা দিলে
কথা রাখতে মোরা বাধ্য,
সকল বাধা থাক না পথে
মোদের রোধার নেই যে সাধ্য?

কথা দিয়ে না রাখাটায়
মোদের মানের হয় যে হানি
ডিপোজিট ফর্ম ভরে শুধু
ব্যাংকে টাকা জমা মানি।

সুদের আশা হৃদয় জেতা
মোদের ভাগ্যে নেই কো জোটে,
হতাশাতে মন ভরে যায়
যাত্রী মোরা দুঃখ বোটে।

কথা রাখার শপথ নিলে
মূল্য মোদের হবেই দিতে,
বাড়তি কষ্ট বাড়তি উদ্যোগ
বাড়তি খরচ হবে নিতে।

বদলে সুখ অনুভূতি-
অমূল্য যা যায় না কেনা,
মোদের জীবন বদলে যাবে
যাবে না আর তখন চেনা।

বারে বারে কথা রাখার
অভ্যাস যদি করতে পারি,
গণতন্ত্র বদলাবে রূপ
ছুটবে দেশের বিকাশ গাড়ি।

ও মেঘ

ও মেঘ

ও মেঘ তুমি যাচ্ছো কোথায়?
দাঁড়াও একটুখানি।
তোমার সঙ্গে আমার অনেক কথা আছে বাকি।

ও মেঘ একটু দাঁড়াও,
তোমার সঙ্গে আমার অনেক চুক্তি করা বাকি ।
সেই চুক্তিতে করতে হবে অনেক মহান কাজ।

তুমি জানো কোন কোন মেঘ বৃষ্টি ঝরায়।
তুমি জানো কাদের হৃদয় হিংসা বিদ্বেষ ঘৃণা ছড়ায়,
ভালোবাসা থাকে বহুদূরে – নির্বাসনে।

তুমি জানো কার চোখ মুখ ক্রোধ বর্ষণ করে,
স্বাভাবিক হার্টবিট যার হয়েছে ইতিহাস।
তুমি জানো কারা সমাজে দুর্নীতি ছড়ায়,
সততা কেন ঘরছাড়া?

তুমি জানো কাদের মনে
উপচে পড়ছে কুসংস্কার আর কুশিক্ষা,
পালিয়ে গেছে ভালো সংস্কার আর সুশিক্ষা।
তুমি জানো কাদের মনের আকাশে আছে দূষণের কালো মেঘ।

ও মেঘ তুমি একটু দাঁড়াও
শেষবারের মতো দাঁড়াও।
শেষবারের মতো এমন শক্তিশালী বর্ষণ কর,-
ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাক-
হৃদয় মনের হিংসা, বিদ্বেষ, ঘৃণা, ক্রোধ,
দুর্নীতি মনোভাব, কুসংস্কার, কুশিক্ষা আর মনের দূষণ।

সাফ হয়ে যাক যত মলিনতা আর কালিমা,
তারপরেতে স্থাপন করো সেথা এক বৈদূর্যমণি।
ধরার ক্ষেত্রে আবার ফলুক উত্তম মানবিক বৃত্তির ফসল।
ও মেঘ আমি তোমার অপেক্ষায়।

 

বিজ্ঞান মেনে

 

বিজ্ঞান মেনে

বিজ্ঞান মেনে ফুল ফোটে গাছে
ফল হয় ফুল থেকে,
বিজ্ঞান মেনে জোয়ার ও ভাঁটা
ঘটে যায় নদী বুকে।

বিজ্ঞান মেনে আমার ব্যাংকে
টাকার বৃদ্ধি ঘটে,
বিজ্ঞান মেনে ফাস্ট ফুডেতে
চর্বিও বাড়ে দেহে।

বিজ্ঞান মেনে দুশ্চিন্তাতে
মানসিক রোগ আসে,
সেই বিজ্ঞানে মানবসমাজ
চলেও আপন পথে।

মোদের মিলিত মনের প্রভাব
গড়ে সমাজের ভিত,
শুভ চিন্তার প্রভাব রইলে
শুভ কাজ ঘটে সেথা।

অশুভ চিন্তা ছায়া যদি ফেলে
মোদের মিলিত মনে,
শুরু হবে শুধু অশুভ ঘটনা
মানবসমাজ ভোগে।

তাই বুঝি আজ বারুদের ধোঁয়া
গন্ধ ছড়ায় হেথা,
মানবতা মরে অন্ধ গুহায়
রাস্তাটা ভুলে যায়।

আস্তাকুড়ের আশে পাশে ঘোরে
ঘৃণিত শৈশব কেন,
মায়ের হৃদয় কখন কঠিন
প্রস্তর বনে যায়।

তবু অচেতন সকলে আমরা
ধরা ধরাশায়ী আজ
আগ্নেয়গিরি জাগলে আজি
নিস্তার নাই আর।

হুঁশিয়ার হয়ে যদি ছেঁকে লই
অশুভ চিন্তা যত,
তখনি কেবল এ ধরা বাঁচবে
আমরা থাকব ভালো।

সাক্ষাৎ

সাক্ষাৎ

দুটি মানুষের সাক্ষাৎ হোক
স্মরণীয় আর অনন্য,
অনন্য হোক আন্তরিকতা
হোক না নেহাত সৌজন্য।

আদান প্রদানে কথার মালিকা
আনুক প্রেরণা সুগন্ধ,
প্রাণিত হোক না দুটি অন্তর
লেখা হোক সেরা নিবন্ধ।

প্রতিটি শব্দ বহন করুক
আত্মিক টান ভালো লাগা,
সাক্ষাৎ পরে দুজনেই খুশি
ভাবে না যে তারা হতভাগা।

মানসিক স্তর উন্নীত তাই
ভাবে পেয়ে গেছে কত কিছু,
উভয়ের লাভ তাই হরষিত
আসুক দুঃখ পিছুপিছু।

প্রতি সাক্ষাৎ এমনি হলেই
আপনজন যে সবখানে,
ভেদাভেদ দানো উধাও হবেই
মিলনের মেলা প্রতি স্থানে।

 

 

 

 

 

শান্তি খোঁজা

white and gray concrete structure

নদীর মিলন সাগর বুকে
করে শান্তি সৃষ্টি,
উষ্ণ ধরার তপ্ত শরীর
শান্ত করে বৃষ্টি।

কারো যখন দুঃখ মোচন
ঘটে তোমার তরে,
বুকের মাঝের ফুলবাগানে
শান্তি পুষ্প ভরে।

শান্তি মানে অশান্ত নয়
শান্ত বড় চিত্ত,
চিত্তে শান্তি দামি অতি
তুচ্ছ সকল বিত্ত।

অস্থির হয়ে শান্তি খোঁজা
মন্দির মসজিদ গমন,
আকাশ থেকে চাঁদটি পাড়া
অস্বাভাবিক তেমন।

শান্তি খোঁজ যখন তুমি
মনের মাঝে গিয়ে,
শান্তি শুয়ে অস্থিরতা
চাদর মুড়ি দিয়ে।

 

 

 

 

 

 

 

ভালোবাসা

ভালোবাসা

ভালোবাসা অর্জন করায়
লক্ষ টাকার কামাই হারে,
ক্রেতা গ্রাহক ভালোবাসলে
তরতরিয়ে ব্যবসা বাড়ে।

ভালবাসা অর্জন করায়
সবার হৃদয় জুড়ে রবে,
প্রিয়জন তো বাসবে ভালো
সংসার তখন সুখের হবে।

বুকে যখন ভালোবাসা
সন্দেহ যায় নির্বাসনে,
আত্মবিশ্বাস জ্যোতি ছড়ায়
রবির লজ্জা প্রতি ক্ষণে।

ভালোবাসার অগ্নিশিখা
জ্বালিয়ে দেয় ঘৃণা বিদ্বেষ,
পুণ্য মন্দির হয়ে ওঠে
তোমার প্রিয় হৃদয় স্বদেশ।

পুণ্য যখন হৃদয় ভূমি
তীর্থ করতে আস্থা আসে,
থাকে সাহস হাতটি ধরে,
সফলতা ভাগ্যাকাশে।

ভালোবাসায় পাথর হৃদয়
গলে গিয়ে হয় যে তরল,
কৃষ্ণ খেল কলার খোসা
বিদুর পত্নীর ভক্তি বিহ্বল।

ভালোবাসা ভালোবাসা
আবার এসো সবার বক্ষে,
চিত্তশুদ্ধি করে সেথা
সুন্দর ধরা করো রক্ষে।