চিত্ত প্রদীপ

Prodip (প্রদীপ)

সবার মনেতে প্রদীপ রয়েছে
দেখতে পাই না মোরা,
গুপ্ত চাদরে গচ্ছিত ধন
খুঁজতে না পারে চোরা।

খুঁজতে খুঁজতে নাকাল নাবিক
দৃষ্টি এড়ায় দ্বীপ,
দিন চলে যায় বিপথে কুপথে
ভুলে যাই বুকে দীপ।

চেতনা তবুও জাগে না মোদের
মন্দ কাজেতে টান,
তোমার নিকটে প্রার্থনা প্রভু
খুলে দাও আলো বান।

এমনি করেই প্রভু তুমি যদি
চিত্ত প্রদীপ জ্বালো,
খুলে যাবে সব রুদ্ধ দুয়ার
ঘুচে যাবে সব কালো।

সকল চিত্ত আলোকিত হলে
দীপাবলি প্রতি পল,
অবচেতনার বিদায় তখন
দেশের প্রগতি ফল।

অন্ধকার রাত

অন্ধকার ঘরে.......

দীর্ঘতম রাত –অমাবস্যার রাত; এর কি শেষ নেই?

একেক প্রহরে একেক অন্ধকার
কখনো দেখি অশিক্ষার অন্ধকার,
মাথায় উপরে ডিগ্রির মুকুট।
কখনো দেখি নৈরাজ্যের অন্ধকার,
নামকরা শাসকের তকমা লাগানো।
কখনো দেখি হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ভুয়ো দেশপ্রেম,
যার মধ্যে লুকিয়ে আছে ঘৃণা আর স্বার্থের অন্ধকার।
কখনো হই নকলে নাকাল।
নকল খাদ্য, নকল ঔষধ – নকলের ছড়াছড়ি;
শুধুই নিকষ কালো কৃত্রিমতার অন্ধকার।
এই রাতের হবে কবে অবসান?

কোন এক শুভ মুহূর্তে কোন এক ঋষির আবির্ভাব হবে। তিনি এসে এক চুমুকে
এই অন্ধকারকে পান করবেন।
নতুন ঊষার নতুন সূর্যের উদয় হবে তখন।

মনটাই বেয়াড়া

বর্তমানে অবগাহন

একনাগাড়ে হেঁটেছি অনেকটা পথ ,
রোদের প্রকোপ সহ্য করে ।
বড়ই ক্লান্ত আমার দেহ। বিশাল দিঘি নিকটে ।
স্নান করতেই পারতাম। শীতল করতে পারতাম শরীরটা।
তবু কেন মন চলে যায় ফেলে আসা পথে -কত উন্মুখ দিঘির পাড়ে;
কিংবা চলে যায় সম্মুখের পরবর্তী পথে,
ভাবে এর চেয়ে ভালো দিঘির খোঁজ পাওয়া যাবে।
সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়? মনটাই আসলে বেয়াড়া
করতে চায় না বর্তমান সময়ে অবগাহন।
উপভোগ করব কি করে জীবনটা?
সে সর্বদা হাওয়ায় ভেসে কখনো পেছনের অতীতে চলে যায়-
যেখানে মজা করার আর উপাদান নেই,
কখনো কল্পনার ভেলায় ভেসে ভবিষ্যতে চলে যায়, তাতেই কষ্ট বাড়ে।
উপভোগ করা যায় না। জীবন হয়ে যায় নীরস।
তাই এসো হাতের নাগালে বর্তমানের দিঘিতে অবগাহন করি।

পেতে যদি চাও

পেতে যদি চাও কিছু,-
প্রাপ্তির কথা ভুলে,
মনের দরজা খুলে,
সম্পদ দাও তুলে।
পেতে যদি চাও কিছু
দান করো দুই হাতে,
নিশ্চিত সুখ তাতে,
ঘুম তাই আঁখি পাতে।

চাই চাই ভুলে তাই-
মন ভরে করো দান
লোকেরা দেবেই মান
করবে যে জয়গান।
চাই চাই ভুলে তাই,-
আজ শুধু দিয়ে যাও,
যাহা তুমি দিয়ে দাও,
ভাবী দিনে ফিরে পাও।

(সংবৃতি ছন্দে)

দেবতা নিচে আসে

দেবতা নিচে আসে

প্রজাপতি কুসুমের রূপে মুগ্ধ,

ভুলে যায় মধু খেতে,

তখন কি দেবতা নিচে আসে,

অপলক দৃষ্টিতে মুগ্ধতা থাকে তার?

সবুজের বনরাজি মাঝে

ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি দেখে মুগ্ধ হয় শিখী

আপন খেয়ালে নাচে

তখন কি দেবতা নিচে আসে নিশ্চিত মুগ্ধতা নিতে?

পলাশের রাঙা বন হাতছানি দিলে

আদিবাসী কিশোরীর পায়ে লাগে পলাশের রেণু,

কুড়িয়ে পলাশ রাখে যবে আপন খোঁপায়;

দেবতা উৎকর্ণ, অনুসরণ করে কি নুপুরের ধ্বনি তার?

অথর্ব পিতার দোলনার নিকটে সন্তান হাঁটে,

তীর্থদর্শনে বা পাহাড়ি মন্দিরে যাবে বলে।

দেবতা তখন কি নিচে নেমে সন্তানের হাত ধরে, কষ্ট হ্রাস করে?

স্বার্থহীন সেচ্ছাসেবী সংস্থা অসহায় শিশুদের মুখে যখন খাবার তুলে দেয়,

হাতে তুলে দেয় পোশাক,

দেবতা তখন কি নিচে নেমে আশীর্বাদ করে ?

দেবতার অবতরণের সেই ছবি গুলো কেন

মনের দরজা খুলে বেরিয়ে হারিয়ে যায় অনায়াসে?

মনের তীক্ষতা হ্রাস দায়ী? তাই উপলব্ধি

করতে পারি না দেবতার উপস্থিতি

সকলের মাঝে, প্রকৃতির মাঝে?

 

 

চকিতে মানে

চকিতে

চকিতে মানে 

অল্প সময়

পলক পড়ায়।

ভাবনা নতুন

মনে আসায়

চকিতে ঝলকানি,

স্বপ্ন পায়রার ঝটপটানি

বুকের মাঝে আশার আলো,

সেই আলোতে আলোকিত

জীবন একটি ঝলমলানো চাঁদনি রাত।

একটি সঠিক ভাবনা তখন কাছে যদি আসে

সেই ভাবনাটার পিঠে চড়ে

জীবনটা বদলাবে অনায়াসে।

সঠিক ভাবনা

কঠিন চেনা

বিশাল আকাশ থেকে যেন

একটা চিল ধরে আনা।

এমন হয় বেশি হয়

সঠিক ভাবনা কোনখানা,

চিনতে চিনতে

ধরতে ধরতে

কাটতে পারে সারা জীবনখানা।

তাই মনের জানালা খোলা রেখো;

নতুন ভাবনার চকিত আলো আসতে পারে,

সজাগ থেকো,

নতুন প্রাণের চকিত হাওয়া আসতে পারে,

সজাগ থেকো।

 

হাটে

হাটে

হাটেতে আজ কে যাবে গো

হলদি নদীর পাশে,

হিয়া বেচা কেনা চলে

সেথা ফাগুন মাসে।

বুড়ো হিয়া যুবক হিয়া

কপট হিয়া শত,

ভিড়ে ভিড়ে ঠেলাঠেলি

ক্রেতা কত কত।

ভদ্র হিয়ার কদর বেশি

ভিড় লেগেছে এখন,

কপট হিয়ার দোকানি তো

মশা তাড়ায় তখন।

আমি খুঁজে খুঁজে মরি

টাটকা হিয়া কোথা,

কোন দোকানে পাবো সেটি

আছে কি আজ সেথা?

সারাদিনে চষে বেড়াই

হাটের অলি গলি,

ক্লান্ত হতাশ আমি যখন

শুকনো বড় নলি I

খালি দোকান মিষ্টি ছেলে

বলে আমায় শোন,

টাটকা হিয়ার দোকান তুমি

পাবে নাকো কোন।

তোমার বুকে আছে হিয়া

যদিও তা বুড়ো,

মনের মাঝে শিশু এনে

টাটকা করো খুড়ো।