যখন ডাকবে মুখের কথা মনের কথা এক করে আমি ঠিক চলে আসব তোমার কাছে।
এতে তুমি একা ভালো থাকবে নির্জন সবুজ প্রান্তরে।
তখন ঘাসের শিশির ভিজিয়ে দেবে ভাবাবেগের পায়ের পাতা,
রবির আলো মাখাবে গায়ে কাজের উদ্দীপনা।
গাছের পাতারা বাতাসের সুরে বাজাবে যে একতারা,
রাতের আকাশ আসবে নিকটে।
চাঁদ-তারাদের ভাষা পারবে বুঝতে,
যেদিকে তাকাবে খুঁজে পাবে কবিতার উপাদান।
তুমি কি তখন ঘুমোতে পারবে নিরুদ্বেগে
এই সমাজে জনসমুদ্রে?
বানভাসি মানুষের দুরবস্থা, আরজিকরের
দুর্ঘটনা তোমাকে তো ঘুমোতে দেবে না।
যারা আজ এখনো ঘুমোচ্ছে তারা যদি ওঠে জেগে,
অন্তর দিয়ে ডাকে আমায় তোমার মতন, সূর্য উদয় হবে পুব আকাশে সম্মিলিত শুভবোধের আলো ছড়িয়ে। থাকবে সমাজ সুস্থ।
আমি শুভবোধ।
Tag Archives: জীবনমুখী
মানবিক করে দাও
ভগবান তুমি দুটো পা দিয়েছ–
সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে,
পেছনে পালাবার জন্যে কি?
ভগবান তুমি শিরদাঁড়া দিয়েছ–
সোজা রেখে হাঁটার জন্যে,
সরীসৃপের মতো হাঁটার জন্যে কি?
ভগবান তুমি হৃদয় দিয়েছ–
সংবেদনশীলতা রাখার জন্যে,
পাথর ভরে রাখার জন্যে কি?
ভগবান তুমি তো মন দিয়েছ–
জাগ্রত রাখার জন্যে, ঘুম পাড়িয়ে রাখার জন্যে নয়।
ভগবান তুমি তো চোখ দিয়েছ–
তোমার সৃষ্টিকে শুদ্ধ দৃষ্টিতে দেখতে,
মন্দ দৃষ্টিতে দেখার জন্যে নয়।
ভগবান তুমি তো মুখ দিয়েছ–
ঠিক সময়ে ঠিক কথা বলতে, কাউকে কটু কথা বলতে নয়।
ভগবান তুমি তো দুটো হাত দিয়েছ–
ভালো কাজের জন্যে, মন্দ কাজের জন্যে নয়।
চারদিকে এই নৃশংসতা রক্তপাত,
খুন–ধর্ষণ দেখিয়ে দিচ্ছে তোমার বানানো মনের কেন্দ্রীয় সফটওয়ার আপডেটেড হয়নি।
এবার তো আপডেট করে একটু মানবিক করে দাও।
আর জঙ্গলে যাব না
এমন জঘন্য ঘৃণ্য নৃশংসতা দেখে
ভেবেছিলাম জঙ্গলে যাব,
এ-নগর ছেড়ে বহু দূরে-
যেখানে এমন মানুষের বেশে শয়তান থাকবে না।
ভেবেছিলাম এ-নগরের পথেঘাটে
নির্ভয়ে হেঁটে বেড়াব,
এত কপটতার দূষণে হাঁটা হল কই?
তাই জঙ্গলে যাব-
সেখানে এমন কপটতা থাকবে না।
এখানে নিঃস্বার্থ সেবার আড়ালে
হিংস্র দুর্নীতি মুখোশ পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে-
জঙ্গলে গেলে এসব দেখতে হবে না,
পশুরাতো মুখোশ পরে না।
এই নগরের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ
যা ঘটে চলেছে অলিতে গলিতে রাজপথে-
খুলে দিয়েছে আমার চোখ।
দেখছি তাই মানবিক মুখ- মুখোশ নয়,
সত্যের আলোর পথ- সত্যের বেচা-কেনা নয়।
দেখছি এখানে তিলোত্তমাদের শক্তি কত,
নাগরিকদের মাথাগুলো শক্ত করে ধরেই রেখেছে শিরদাঁড়া- বিক্রি হয়নি।
তাই ভাবছি আর জঙ্গলে যাব না,
বাকি জীবনটা এই বাংলায় কাটিয়ে দেব।
অন্ধকার রাত
দীর্ঘতম রাত –অমাবস্যার রাত; এর কি শেষ নেই?
একেক প্রহরে একেক অন্ধকার।
কখনো দেখি অশিক্ষার অন্ধকার,
মাথায় উপরে ডিগ্রির মুকুট।
কখনো দেখি নৈরাজ্যের অন্ধকার,
নামকরা শাসকের তকমা লাগানো।
কখনো দেখি হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ভুয়ো দেশপ্রেম,
যার মধ্যে লুকিয়ে আছে ঘৃণা আর স্বার্থের অন্ধকার।
কখনো হই নকলে নাকাল।
নকল খাদ্য, নকল ঔষধ – নকলের ছড়াছড়ি;
শুধুই নিকষ কালো কৃত্রিমতার অন্ধকার।
এই রাতের হবে কবে অবসান?
কোন এক শুভ মুহূর্তে কোন এক ঋষির আবির্ভাব হবে। তিনি এসে এক চুমুকে
এই অন্ধকারকে পান করবেন।
নতুন ঊষার নতুন সূর্যের উদয় হবে তখন।
মনটাই বেয়াড়া
একনাগাড়ে হেঁটেছি অনেকটা পথ ,
রোদের প্রকোপ সহ্য করে ।
বড়ই ক্লান্ত আমার দেহ। বিশাল দিঘি নিকটে ।
স্নান করতেই পারতাম। শীতল করতে পারতাম শরীরটা।
তবু কেন মন চলে যায় ফেলে আসা পথে -কত উন্মুখ দিঘির পাড়ে;
কিংবা চলে যায় সম্মুখের পরবর্তী পথে,
ভাবে এর চেয়ে ভালো দিঘির খোঁজ পাওয়া যাবে।
সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়? মনটাই আসলে বেয়াড়া।
করতে চায় না বর্তমান সময়ে অবগাহন।
উপভোগ করব কি করে জীবনটা?
সে সর্বদা হাওয়ায় ভেসে কখনো পেছনের অতীতে চলে যায়-
যেখানে মজা করার আর উপাদান নেই,
কখনো কল্পনার ভেলায় ভেসে ভবিষ্যতে চলে যায়, তাতেই কষ্ট বাড়ে।
উপভোগ করা যায় না। জীবন হয়ে যায় নীরস।
তাই এসো হাতের নাগালে বর্তমানের দিঘিতে অবগাহন করি।